প্রায়ই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, যারা জোরে নাক ডাকেন তারা কেন নিজের নাক ডাক শুনতে পান না? মূলত, এর পেছনে রয়েছে অনেক বৈজ্ঞানিক ও শারীরিক কারণ। তাই আজ আমরা আপনাকে বলব, কেন মানুষ নিজের নাক ডাকার শব্দ নিজে শুনতে পান না এবং এর অর্থ কী হতে পারে।
ঘুম বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা যখন ঘুমাই, তখন আমাদের মস্তিষ্ক ঘুমের মধ্যে থাকে। এই সময় আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ক একটি শিথিল অবস্থায় থাকে।
তাই আমরা বাইরের শব্দ পুরোপুরি শুনতে পাই না। যখন আপনি নাক ডাকেন, তখন আপনি সেই শব্দ বুঝতে পারেন না, কারণ আপনার মস্তিষ্ক সচেতন থাকে না। নাক ডাকার শব্দ আমাদের কানে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট জোরে ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা নিজেরাই এই শব্দ তৈরি করি।
আমাদের শরীর এটি অভ্যন্তরীণভাবে শুনতে পায়। তাই বাইরের শব্দ বা পরিবেশ থেকে আসা অন্যান্য শব্দ এটিকে ডুবিয়ে দিতে পারে। এই কারণেই আমাদের সঙ্গে ঘুমানো লোকেরা আমাদের নাক ডাকা শুনতে পায়। কিন্তু আমরা আমাদের নিজস্ব শব্দ বুঝতে পারি না, এমনটাই বলছেন পালমোনোলজিস্ট জি সি খিলনানি।
নাক ডাকা একটি অত্যন্ত অভ্যন্তরীণ শব্দ, যা আমাদের শ্বাসনালী ও গলা থেকে উৎপন্ন হয়।
অতএব, এই শব্দ শরীরের অভ্যন্তরীণ ও সরাসরি আমাদের কানে পৌঁছায় না। এর ফলে নাক ডাকা আমাদের কাছে কম শোনা যায়। কিন্তু বাইরের লোকের কাছে তা আরো জোরে শোনা যায়।
নাক ডাকার তীব্রতা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। কিছু লোক খুব জোরে ও অনুরণিতভাবে নাক ডাকে, আবার কেউ কেউ আরো মৃদু ও শান্তভাবে নাক ডাকে। আপনার কণ্ঠস্বর যদি নরম হয়, তাহলে আপনার নিজের নাক ডাক শোনা আরো কঠিন হতে পারে।
আপনি যদি ক্রমাগত জোরে জোরে নাক ডাকেন, তাহলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হতে পারে। নাক ডাকা কখনো কখনো স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ, যা শ্বাসকষ্টের সমস্যা। তাই, যদি আপনার আশেপাশের কেউ আপনাকে নাক ডাকার কথা বলে, তাহলে ডাক্তারি পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
নাক ডাকা অভ্যন্তরীণভাবে হয় এবং মস্তিষ্ক ঘুমিয়ে থাকার কারণে আমরা তা বুঝতে পারি না। কেবল আমাদের আশেপাশের লোকেরাই বলতে পারে যে আমরা নাক ডাকছি। তাই আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দিন এবং যদি নাক ডাকা খুব জোরে ও ক্রমাগত হয়, তাহলে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সূত্র : নিউজ ১৮