যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগালের পর এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, আন্দোর্রা, মোনাকো। এর আগে চলতি বছরের ২০ মার্চ মেক্সিকো সরকার জানায়, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
এর মধ্যদিয়ে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৫৬টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল। গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধ ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিক্রিয়া হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলো এ স্বীকৃতির দিয়েছে। এসব দেশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠল।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে। স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসও। আর যথারীতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসরায়েল।
সম্প্রতি গাজার
বৃহত্তম শহর
গাজা
নগরীতে
সর্বাত্মক হামলা
শুরু
করেছে
ইসরায়েল। উদ্দেশ্য একটাই,
জনবহুল
এই
নগরী
পুরোপুরি খালি
করে
দখলে
নেওয়া।
এ
পরিস্থিতিতে যুদ্ধ
ও
জাগিত
নিধন
বন্ধে
ইসরায়েলকে বাধ্য
করতে
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশের
ওপর
আন্তর্জাতিক চাপ
ক্রমেই
বাড়ছে।
বিশ্লেষকদের মতে,
চাপ
আরও
বৃদ্ধিতে সহায়ক
ভূমিকা
রাখতে
পারে
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে যেসব দেশ
এ
পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩
সদস্যের মধ্যে
১৫১টি
দেশ
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে
স্বীকৃতি দিয়েছে। এর
মধ্যে
এশিয়া,
আফ্রিকা, লাতিন
ও
মধ্য
আমেরিকার দেশই
বেশি।
২০২৫
সালে
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে
পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, কানাডা,
অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা,
আন্দোর্রা, মোনাকো।
২০২৪
সালে
আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে,
স্পেন,
বাহামা,
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো,
জ্যামাইকা, বার্বাডোজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২০১৯
সালে
সেন্ট
কিটস
অ্যান্ড নেভিস,
২০১৮
কলম্বিয়া, ২০১৫
সেন্ট
লুসিয়া,
হলি
সি,
২০১৪
সুইডেন,
২০১৩
হাইতি,
গুয়াতেমালা, ২০১২
সালে
থাইল্যান্ড, ২০১১
সালে
আইসল্যান্ড, ব্রাজিল, গ্রানাডা, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ডমিনিকা, বেলিজ,
সেন্ট
ভিনসেন্ট, হন্ডুরাস, এল
সালভাদর, সিরিয়া,
দক্ষিণ
সুদান,
লাইবেরিয়া, লেসোথো,
উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, সুরিনাম, পেরু,
গায়ানা,
চিলি,
২০১০
সালে
ইকুয়েডর, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, ২০০৯
সালে
ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র, ভেনেজুয়েলা, ২০০৮
সালে
আইভরি
কোস্ট,
লেবানন,
কোস্টারিকা, ২০০৬
সালে
মন্টেনেগ্রো, ২০০৪
সালে
পূর্ব
তিমুর,
১৯৯৮
সালে
মালাউয়ি, ১৯৯৫
সালে
কিরগিজস্তান, দক্ষিণ
আফ্রিকা, পাপুয়া
নিউগিনি, ১৯৯৪
সালে
উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, ১৯৯২
সালে
বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, জর্জিয়া, তুর্কমেনিস্তান, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, ১৯৯১
সালে
ইসওয়াতিনি, ১৯৮৯
সালে
ফিলিপাইন, ভানুয়াতু, বেনিন,
ইকুয়েটরিয়াল গিনি,
কেনিয়া,
ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ভুটান, বুরুন্ডি, বতসোয়ানা, নেপাল, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, পোল্যান্ড, ওমান, গ্যাবন, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিন্সেপ, মোজাম্বিক, অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, সিয়েরা লিওন, উগান্ডা, লাওস, চাদ, ঘানা, টোগো, জিম্বাবুয়ে,
মালদ্বীপ, বুলগেরিয়া, কেপ
ভার্দে,
উত্তর
কোরিয়া,
নাইজার,
রোমানিয়া, তানজানিয়া, হাঙ্গেরি, মঙ্গোলিয়া, সেনেগাল, বুরকিনা ফাসো,
কম্বোডিয়া, কমোরোস,
গিনি,
মালি,
গিনি
বিসাউ,
চীন,
বেলারুশ, নামিবিয়া, রাশিয়া,
ইউক্রেন, ভিয়েতনাম, সাইপ্রাস, চেক
প্রজাতন্ত্র, মিসর,
গাম্বিয়া, ভারত,
নাইজেরিয়া, সিশেলস,
স্লোভাকিয়া, শ্রীলঙ্কা, আলবেনিয়া, ব্রুনেই, জিবুতি,
মরিশাস,
সুদান,
আফগানিস্তান, কিউবা,
জর্ডান,
মাদাগাস্কার, নিকারাগুয়া, পাকিস্তান, কাতার,
সৌদি
আরব,
সার্বিয়া, সংযুক্ত আরব
আমিরাত,
জাম্বিয়া, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক,
কুয়েত,
লিবিয়া,
মালয়েশিয়া, মৌরিতানিয়া, সোমালিয়া, তিউনিসিয়া, তুরস্ক,
ইয়েমেন,
মরক্কো,
ইরান।
এদিকে,
বিশ্বের ধনী
দেশগুলোর জোট
জি-৭-এর সদস্যদের মধ্যে
প্রথম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল
যুক্তরাজ্য, কানাডা
ও
ফ্রান্স। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে
পাঁচটি
স্থায়ী
সদস্যদেশ রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়া। এই
পাঁচ
দেশের
ভেটো
ক্ষমতা
রয়েছে।
স্থায়ী
পাঁচ
সদস্যের মধ্যে
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে এ
পর্যন্ত শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়নি।
২০১২
সালে
জাতিসংঘ সাধারণ
পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে ‘সদস্যবহির্ভূত পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে
স্বীকৃতি দেওয়া
হয়।
২০২৪
সালের
এপ্রিল
মাসে
ফিলিস্তিনের পূর্ণ
সদস্যপদ অর্জনের প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে
উত্থাপন করা
হলেও
যুক্তরাষ্ট্র তাতে
ভেটো
দেয়।
পরের
মাসে
(মে
২০২৪)
সাধারণ
অধিবেশনে একটি
প্রস্তাব পাস
হয়।
এ
প্রস্তাব ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের ‘পূর্ণ
সদস্য
হওয়ার
যোগ্য’
হিসেবে
বিবেচনা ও
নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টি
পুনর্বিবেচনা করতে
উৎসাহী
হতে
বলে।
তবে
ফিলিস্তিন এখনো
জাতিসংঘে পূর্ণ
সদস্যপদ পায়নি।
ইত্তেফাক/এটিএন
No comments:
Post a Comment