জুমার দিনের বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য
জুমার
দিন
মুসলমানদের জন্য
আল্লাহর পক্ষ
থেকে
বিশেষভাবে বরকতময়
একটি
দিন।
এটি
এমন
একটি
দিন,
যা
অসংখ্য
ফজিলত
ও
রহমতে
পরিপূর্ণ। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জুমার
দিন
শুরু
হয়
বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর
এবং
শেষ
হয়
শুক্রবার মাগরিবের সময়।
এদিনের
গুরুত্ব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বাণীতেই স্পষ্ট
হয়েছে।
তিনি
বলেছেন,
“সবচেয়ে উত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।” (মুসলিম)
জুমার
দিন
আল্লাহর কাছ
থেকে
বরকত
ও
ক্ষমা
লাভের
সুযোগ,
যা
মুসলমানদের উচিত
সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে
কাজে
লাগানো।
জুমার দিনের করণীয় কাজগুলো
ADB2
১.
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
জুমার
দিন
অন্য
যে
কোনো
দিনের
তুলনায়
বেশি
প্রস্তুতি এবং
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় যত্ন
নেওয়া
উচিত।
এদিন
গোসল
করা,
নখ
কাটা,
দাঁত
পরিষ্কার করা,
সুন্দর
ও
পরিষ্কার পোশাক
পরিধান
করা
এবং
সুগন্ধি ব্যবহার করা
সুন্নাহ। রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেছেন,
“যখন তোমরা জুমার নামাজে আসবে, তখন গোসল করা উচিত।” (বুখারি)
২.
জুমার খুতবা ও নামাজে অংশগ্রহণ
পুরুষদের জন্য
জুমার
নামাজ
জামাতে
আদায়
করা
বাধ্যতামূলক। মসজিদে
গিয়ে
ইমামের
খুতবা
শোনা
এবং
নামাজ
আদায়
করা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ
বলেন,
“যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ছেড়ে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম।” (সুরা জুমা:
৯)
৩.
বেশি বেশি দোয়া করা
জুমার
দিনে
বিশেষভাবে একটি
সময়
থাকে,
যখন
আল্লাহ
বান্দার সব
দোয়া
কবুল
করেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেছেন,
“জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, তা তাকে দেওয়া হবে।” (বুখারি ও
মুসলিম)
আসর
থেকে
মাগরিব
পর্যন্ত এই
সময়
বিশেষ
গুরুত্ব সহকারে
দোয়া
করা
উচিত।
৪.
সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা
জুমার
দিনের
আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ আমল
হলো
সুরা
কাহফ
তিলাওয়াত করা।
রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেছেন,
“যে ব্যক্তি শুক্রবার সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই শুক্রবারের মধ্যে নুর থাকবে।” (সুনান আল-কুবরা)
৫.
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা
জুমার
দিনে
বেশি
বেশি
দরুদ
পাঠ
করার
তাগিদ
দেওয়া
হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেছেন,
“তোমরা জুমার দিনে আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো, কারণ তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছানো হয়।” (আবু দাউদ)
৬.
ইস্তিগফার করা ও পাপ মোচনের চেষ্টা
জুমার
দিন
ইস্তিগফার করার
মাধ্যমে আল্লাহর কাছে
পাপের
জন্য
ক্ষমা
প্রার্থনা করা
উচিত।
এটি
আল্লাহর কাছে
বান্দার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়
এবং
পাপমুক্তির সুযোগ
করে
দেয়।
৭.
দান-সদকাহ করা
জুমার
দিনে
দান-সদকাহ করার বিশেষ
ফজিলত
রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেছেন,
“দান-সদকাহ রাগকে ঠেকিয়ে দেয় এবং খারাপ মৃত্যু দূর করে।” (তিরমিজি) গরিব-অসহায়দের সাহায্য করা এবং তাদের
মুখে
হাসি
ফোটানো
আল্লাহর নৈকট্য
লাভের
একটি
উত্তম
মাধ্যম।
উপসংহার
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ নেয়ামত। এই দিনের প্রতিটি মুহূর্ত বরকতপূর্ণ এবং তা যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত। ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া, জিকির, সুরা কাহফ তিলাওয়াত এবং নেক কাজের মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিন যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন।
No comments:
Post a Comment